March 13, 2025
Thursday
শুভ জন্মদিন স্যার জগদীশ
News

শুভ জন্মদিন স্যার জগদীশ

শুভ জন্মদিন স্যার জগদীশ

জগদীশ চন্দ্র বসু একজন সফল বাঙালি বিজ্ঞানী। উদ্ভিদ ও তড়িৎ চৌম্বক ছিল তার গবেষণার প্রধান বিষয় বস্তু। আবিষ্কারের মধ্যে উদ্ভিদের বৃদ্ধিমাপক যন্ত্র ক্রেস্কোগ্রাফ, উদ্ভিদের দেহের উত্তেজনার বেগ নিরুপক সমতল তরুলিপি যন্ত্র রিজোনাস্ট রেকর্ডার অন্যতম।

স্যার জগদীশচন্দ্র বসু সম্পর্কে আইনস্টাইন বলেছিলেন, ‘জগদীশচন্দ্র যেসব অমূল্য তথ্য পৃথিবীকে উপহার দিয়েছেন তার যে কোনটির জন্য বিজয়স্তম্ভ স্থাপন করা উচিত।’

এই বরেণ্য বিজ্ঞানি ও কীর্তিমান বাঙালির জন্মদিন ৩০ নভেম্বর।  জগদীশ চন্দ্র বসু ১৮৫৮ সালের ৩০ নভেম্বর ময়মনসিংহ শহরে জন্ম নেন। তার বাবার বাড়ি মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুরের রাঢ়িখাল গ্রামে। তার বাবা ভগবান চন্দ্র বসু তখন ফরিদপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। 

জগদীশ চন্দ্রের প্রথম স্কুল ছিল ময়মনসিংহ জিলা স্কুল।জগদীশ কলকাতার হেয়ার স্কুল থেকে পড়াশোনা করে ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে বিএ পাশ করেন কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে। ১৮৮০ সালে লন্ডনে পাড়ি জমান। অসুস্থতা তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। চিকিৎসাবিজ্ঞান ছেড়ে তিনি কেমব্রিজের ক্রাইস্ট কলেজে ভর্তি হন।

এখান থেকে ট্রাইপস পাশ এবং প্রায় একই সাথে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি পড়া শেষ করেন। ১৮৮৫ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। যোগদেন প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের অস্থায়ী অধ্যাপক পদে। তার গবেষণার সূত্রপাতও এখানে। বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্রের  জন্মও ধরা হয় এখান থেকেই।

প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনার প্রথম আঠারো মাসে জগদীশ যে সকল গবেষণা কাজ সম্পন্ন করেছিলেন তা লন্ডনের রয়েল সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত হয়। এই গবেষণা পত্রগুলোর সূত্র ধরেই লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় ১৮৯৬ সালের মে মাসে তাকে ডিএসসি ডিগ্রী প্রদান করে।

 ১৮৯৫ সালে তিনি অতিক্ষুদ্র তরঙ্গ সৃষ্টি এবং কোন তার ছাড়া এক স্থান থেকে অন্য স্থানে তা প্রেরণে সফলতা পান। এ নিয়ে আরও গবেষণা করার জন্য তিনি চেষ্টা করছিলেন যদিও শেষ করার আগেই তিনি মারা যান। জগদীশচন্দ্র তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করে সর্বপ্রথম প্রায় ৫ মিলিমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট তরঙ্গ তৈরি করেন। এ ধরনের তরঙ্গকেই বলা হয়ে অতি ক্ষুদ্র তরঙ্গ বা মাইক্রোওয়েভ। আধুনিক রাডার, টেলিভিশন এবং মহাকাশ যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই তরঙ্গের ভূমিকা অনস্বীকার্য। মূলত এর মাধ্যমেই বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ তথ্যের আদান প্রদান ঘটে থাকে। এছাড়া উদ্ভিদের প্রাণ আছে এটিও তিনি বৈজ্ঞানিক গবেষণার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেন। 

১৯৩৭ সালের ২৩ নভেম্বর এই বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী মৃত্যু বরণ করেন। 

বাঙালির বিজ্ঞান ভীতি দূর করতে অগ্রগামী ছিলেন জগদীশ চন্দ্র বসু। তার বিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধগুলো তারই প্রমাণ। 

জন্মদিনে এই কীর্তিমান বিজ্ঞানির প্রতি অশেষ শ্রদ্ধা।